অগ্রগামী
অগ্রগামী

পেছনের সিটের সহাযাত্রীটিকে অসহ্য লাগছে। দেখতে যেমন উলুম্বুস, আচার আচরনও তেমনি। তার আচরণে বাসের অন্যান্য যাত্রীরা খুব বিরক্ত। ক্ষনে বাসের হেল্পারকে তুচ্ছ কারণে ধমকাচ্ছে, ক্ষনে হেল্পারের পক্ষে কথা বলা অন্য সহযাত্রীদের। সৌজন্যতাবোধের কোন বালাই নেই। থেকে থেকে ভোকাল কর্ডের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করে ফোনে কথা বলছে এরসাথে, ওরসাথে। কর্কশ ভাষায় ধমকাচ্ছেও ফোনের ওপাশের কাউকে। এটা যে একটা পাবলিক পরিবহন, এখানে আরও অনেক যাত্রী আছে- সেদিকে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। যেনো সমস্ত পৃথিবকে উপেক্ষা করে চলাই তার স্বভাব। রুক্ষ আর অমার্জিত আচরণে গাড়ির সমস্ত যাত্রীদের সে অতিষ্ঠ করে তুলছে। অপমানিত হবার ভয়ে যাত্রীরা কেউ কিছু বলছেও না। অনেকটা জিম্মিদশা। বত্রিশ সিটের সিটিং গাড়ীটিতে কমের পক্ষে পয়তাল্লিশ জন যাত্রী। সবাই সিলেট হতে সুনামগঞ্জ যাচ্ছে। ওখানে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। দেখতে দেখতে ফুলেফেঁপে উঠছে সুরমা অববাহিকার বর্ষার পানি। শোনা যাচ্ছে, উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্যে দৈনিক বৃষ্টিপাত এর পরিমাণ শতবর্ষের রেকর্ড ভংগ করেছে। এই বৃষ্টির পানিই বরাক নদীসহ অন্যান্য নদনদী দিয়ে সিলেট অঞ্চলে ঢুকে প্লাবিত করে চলছে সুরমা, কুশিয়ারা অববাহিকা। অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকা বলে সুনামগঞ্জ এর অবস্থা বেশি খারাপ। এর এরমধ্যেই বন্যার পানি হুড়মুড় করে ঢুকে পড়েছে অনেকের বসতভিটায়। অনেকের বাড়িতে হানা দেয়ার পায়তারা করছে অনাহুত বানের পানি। সিলেট সুনামগঞ্জ রাস্তাও বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম।  সারা রাস্তা জুড়ে এখানে ওখানে দখল নিয়েছে উজানের পানি। তীব্র বেগে ছিটকে পড়ছে রাস্তার এপাশ থেকে ওপাশে। স্রোতের সফেদ ফেনা যেনো দাঁত দেখিয়ে কটাক্ষ করছে। এ অবস্থায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। তাই গণপরিবহনেই চেপে বসেছি। আমাদের এ বাসটিই সম্ভবতঃ এ রুটের সুনামগঞ্জগামী আজকের শেষ পাবলিক বাহন। এ রুটের পরবর্তী কোন পাবলিক পরিবহন সুনামগঞ্জ যেতে পারবে, এমন আশা ক্ষীণ। পানি যে মাত্রায় বাড়ছে, তাতে কিছু সময়ের মধ্যেই সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার কথা। এ পরিস্থিতিতে আতংকিত মানুষ যত সম্ভব ঠেলেঠুলে গাড়িতে উঠে পড়েছে। টিকিট ছাড়াই। টিকিট করা অন্য যাত্রীরাও অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় কোন আপত্তি করেনি। বরং যত সম্ভব যাত্রী তুলে নিতে উৎসাহ দিয়েছে। সবাই বিপদগ্রস্ত কিনা, তাই হয়তো। অন্য সময় হলে সিটিং গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী তুললে হইহই করতো সবাই। কিন্তু এ বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে সবাই মানবিক। মানুষের বিপদে মানুষের এ সহানুভূতি আশার সঞ্চার করে।

ড্রাইভারের ঠিক পেছনের সিটে যায়গা পেয়েছি। তাতে সুবিধাই হয়েছে। গাড়ির সামনে রাস্তার অনেকটাই আমার কাছে দৃশ্যমান। বানের পানিতে রাস্তার দুপাশের দোকানপাট, ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে। কিছুদূর যেতেই চোখে পড়ে রাস্তার অনেকটা অংশ জুড়ে পানির তীব্র স্রোত গড়িয়ে যাচ্ছে এপাশ থেকে ওপাশে । দুপাশের মনুষ্য বসতিগুলো পানির স্রোতে প্লাবিত। গাছপালা, ঘরবাড়ি স্রোতের তীব্রতায় হেলে পড়ছে। রাস্তার পাশে একটা শীর্ণকায় গাছের চারা ক্ষণে স্রোতের কাছে পরাস্ত হয়ে মাথা নুয়াচ্ছে, আবার শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে ধনুকের বেগে উঠে দাড়াচ্ছে। যেনো অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জীবন নিংড়ানো প্রতিবাদ। সভ্যতাকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে স্রোতে গা ভাসিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছে ছোট্ট একটা ডিংগি নৌকা। নৌকায় দু'টি ছাগল ছানা পানির ভয়ে জড়সড়। রাস্তার উপর হাটুসমান পানি। এ পানি মাড়িয়ে পায়ে হেটে জামা-কাপড় ভিজিয়ে আসছে যাচ্ছে নিরূপায় নারী-পুরুষ। এদের অনেকের বাহন পানিতে ডুবে বিকল হয়ে গেছে অথবা স্বল্প পরিসরে যাতায়াতের কোন বাহন পাচ্ছে না। পানিতে মোটরবাইক ঠেলে আসা যাওয়া করছে বাইকাররা । সিএনজি, প্রাইভেট কার এমনকি দু'একটা বাসও ইঞ্জিন বিকল হয়ে পানিতে মুখ ডুবিয়ে আছে । যেনো অপমান আর লজ্জায় মুখ দেখাবার জো নেই। শুধু বিশাল আকারের ট্রাকগুলি তুচ্ছ পানিকে পাত্তা না দিয়ে ড্যাম কেয়ারভাবে পানি ছিটিয়ে রাস্তা অতিক্রম করে যাচ্ছে। গাড়িকূলে ট্রাকই যে রাস্তার রাজা, তা চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে যাচ্ছে।

আমাদের ড্রাইভারকে বেশ পাকা ড্রাইভারই মনে হলো। বেশ সাবধানে ধীরগতিতে অন্য গাড়ীগুলো এড়িয়ে পানি পার হচ্ছে। কিন্তু শেষরক্ষা হবে কিনা শংকা দেখা দেয় মনে। সুনামগঞ্জ শহরে আমার জনশুণ্য বাড়িটিতে তালা ঝুলানো। পরিবারের অন্য সবাই বেশ কিছুদিন হলো ঢাকায়। তাই বাসার পরিস্থিতি জানতে প্রতিবেশীরাই ভরসা। এক প্রতিবেশি কিছুক্ষণ আগে ফোনে জানিয়েছে,  আর মাত্র ইঞ্চি দশেক পানি বাড়লেই আমার নীচতলায় পানি ঢুকে যাবে। এ অবস্থায় পানি হামলে পড়ার আগে আগেই বাসায় পৌছাতে পারলে ভালো হতো। কিছু কিছু জরুরি মালামাল হয়তো দোতলায় তোলে রক্ষা করা সম্ভব হতো। তাই আশংকা নিয়েই ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করি-

- ড্রাইভার সাব। গাড়ি সুনামগঞ্জ যেতে পারবেতো শেষ পর্যন্ত? 

ড্রাইভারের উত্তর অনেকটা দার্শনিকের মতো - দেখা যাওক। চেষ্টাতো করতাছি। আল্লায় চাইলে যাইবো।

আমিও তার মতোই মহান স্রষ্টার প্রতি আস্থা রাখতে চাই। এ ছাড়া কোন উপায়ও দেখছি না।কিন্তু পেছনের সিটে বসা সেই লোকটি এমন অনিশ্চয়তা মেনে নিতে নারাজ। ড্রাইভারের এমন উত্তরে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে।

- দেখা যাউক মানে? যাওন লাগবই। কুনু দেখাদেখি নাই। টেকা দিয়া টিকিট করছি না? ডাবল ভাড়া নিছো। এহন কয়, দেখা যাউক।

অন্য সময় হলে ড্রাইভার ছেড়ে কথা বলতো না। এরা এমনিতেই যাত্রীদের সাথে শোভন আচরণ করে না। একজন যাত্রীর এমন ধৃষ্টতামুলক আচরন মুখ বুজে মেনে নেয়ারতো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু এবার এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেলো। ড্রাইভার নিরুত্তর। হয়তো বন্যার কারণে আসন্ন বিপদসংকুল অবস্থার জন্য তার মন কিছুটা আর্দ্র। অথবা লোকটিকে অপ্রকৃতস্থ হিসেবে ধরে নিয়ে তার সকল কথাবার্তা এড়িয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এবার সামনে মহাসমুদ্র। এ অংশে শুধু পানি আর পানি। রাস্তা মাঠ একাকার। পানির গভীরতাও অনেক। রাস্তার রোড মার্ক তো দূরের কথা, কোন অংশটুকু রাস্তা আর কোন অংশটুকু খাদ তাই ঠাওর করা যাচ্ছে না। ভুলক্রমে গাড়ির একটি চাকাও যদি রাস্তার বাইরে খাদে পড়ে যায় তাহলে আর রক্ষে নেই। গাড়ির সলিল সমাধি না হলেও যাত্রার এখানেই বর্ণিল সমাপ্তি হবে - তা আর ঘোষণা দেয়ার অপেক্ষা রাখে না। সাবধানী ড্রাইভার তার হেল্পারটিকে পাঠালো পানিতে নেমে রাস্তা চিনিয়ে আগে আগে এগিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু হেল্পারটি খুব আনাড়ি। বলা যায় জড়বুদ্ধি সম্পন্ন। সে একবার রাস্তার মাঝ বরাবর, একবার ডানপাশ, একবার বামপাশ করে এলোপাথাড়ি পথ দেখাচ্ছে। রাস্তা দেখানোর চেয়ে গা বাঁচিয়ে তার পরিধেয় বস্ত্রটিকে পানির ছোবল থেকে রক্ষা করার প্রতিই তার অধিক মনযোগ মনে হলো। এবার ফোঁস করে রেগে উঠে পেছনের সিটের সেই লোকটি। ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে স্বগোতক্তি -

"ইলাখান বকরি মার্কা হেল্পার লগে নিয়া গাড়ি চালাও কিতার লাগি? ইতার দেখি বুদ্ধিসুদ্ধি কোনতা নাই। ইতায়তো হাটু পানিতেই গাড়ি ডুবাইলাইবো।"

বলেই এক লাফে নিজেই নেমে পড়ে পানিতে। দ্রুত সামনে গিয়ে কিছু মধুর বাক্য বর্ষণ করে কিশোর হেল্পারটির উপর। গাড়ির সামনের গ্লাসটি ব্জ্রপাতের মতো নকশা করে ফাঁটা। এর ভেতর দিয়ে আমি সবই দেখছি। হেল্পারও কোন প্রতোত্তর না দিয়ে মাথা হেট করে ফিরে আসে গাড়িতে। যেনো বকা কিছু হজম করতে হলেও জামা-কাপড়তো ভেজাতে হয়নি। লোকটি নিজেই নেমে পরেছে রণাঙ্গনে। পথপ্রদর্শক এর ভুমিকায়।  পরিধেয় প্যান্ট ভিজিয়ে রাস্তার বাম কিনারা মেপে মেপে অতি সাবধানে পথ দেখিয়ে চলে ড্রাইভারকে। ড্রাইভারও তার তৎপরতায় আস্থাশীল। ভালই এগিয়ে চলছে আমাদের গাড়ি। কিন্তু হঠাৎ বেঁকে বসে গাড়ির ইঞ্জিন। কোন ঘোষণা ছাড়াই তীব্র একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। সাইলেন্সারে পানি ঢুকে গেছে কিনা কে জানে। ড্রাইভার বেশ কয়েকবার চাবি ঘুরিয়ে পুনরায় স্টার্ট করার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রতিবারই গাড়ি তার বিশাল দেহটিকে মৃগীরোগীর মতো সামান্য একটু কাঁপিয়ে আবার নিথর হয়ে যায়। ব্যর্থ হয়ে ড্রাইভার ঘোষণা দেয়-

গাড়ি ঠ্যালা দেওন লাগবো। হক্কলে নাইম্যা ইট্টু ঠ্যালা দেওক্কা।

এমন ঘোষণায় যাত্রীরা সবাই এ ওর দিকে তাকাচ্ছে। গাড়ি ঠেলতে হলে প্যান্ট গুটিয়ে পানিতে নামতে হবে। বাইরে হালকা বৃষ্টিও পড়ছে। এ অবস্থায় যাত্রীরা কেউই এগিয়ে আসছে না।  সবাই মনে মনে ভাবছে অন্যরা নামুক, আমি না নামলেও চলবে। ফলাফল, গাড়িটি আটকা পড়েই আছে। ইতোমধ্যে গাড়িতে ফিরে এসেছে সেই অগ্রগামী লোকটি। কেউই নামছে না দেখে সে হতাশ। গাড়ির অন্যান্য যাত্রীদের দিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে নিজের বা পায়ের গোড়ালির দিকে। আমারও চোখ গেলো তার পায়ের দিকে। লক্ষ্য করলাম তার বা পায়ের তলা থেকে রক্ত ঝরছে। নিশ্চয় পানির নিচে কোনকিছুতে খোঁচা খেয়ে এ অবস্থা। এ বিষয়ে তাকে কিছু বলতে চাইলে সে পাত্তাও দিলো না। যাত্রীদের একজনও নামছে না দেখে শেষ পর্যন্ত রেগে সে অগ্নিশর্মা। হেল্পারটিকে হুকুম দেয়-

এই বকরি, তর বালতিটা কোয়াই দে আমারে। গাড়ির হক্কলেই কুইচ্যা মুরগী। ডিমে ওম দিতাছইন তাইনরা। বালতিত পানি ভইরা হক্কল মুরগী আমি চুবাইরাম। একটা মুরগীও গাড়িত উবাই থাকতো দিতাম না।

এমন ঘোষণায় যাত্রীরা সবাই প্রমাদ গোনে। লোকটির চোখে মুখে যে দৃঢ়তা তাতে এমনটি সে করতেই পারে। এবার না নামলে নিশ্চিত বালতিতে পানি ভরে গাড়ির সবাইকে চুবাবে। অপমানের ভয়ে প্যান্ট- লুংগি গুটিয়ে যাত্রীরা একে একে নামতে থাকে গাড়ি থেকে। একজনও গাড়িতে বসে থাকার সাহস করে না। এমনকি গাড়ির মহিলা যাত্রী যে ক'জন ছিলো তাদেরও একজন নামতে উদ্যত হয়। সেই ভদ্রলোক হাত উচিয়ে তাকে নিবৃত্ত করে। মহিলারা মায়ের জাত। গাড়ি ঠ্যালার কাজ তাদের না। তাদের পানিতে নামতে হবে না।

আমি চুপচাপ প্যান্ট গুটিয়ে পানিতে নামি। গাড়ির সামনের দরজার হাতলটা ধরে মৃদু ঠেলছি। গাড়িটা ধরে আছে সবাই। ঠ্যালছেও অনেকেই। ঠেলায় জোর আনার জন্য রিদম দরকার। আর এ রিদমের জন্য প্রয়োজন শ্লোগান। পেছন থেকে সেই শ্লোগানের উচ্চস্বর ভেসে আসছে। আর স্বরটি প্রত্যাশিতভাবেই সেই লোকটির -

-হেই, জোরে ঠ্যালো
- হেইও
-,আরো জোরে
- হেইও
- হইছে নাগো
- হেইও
- শক্তি লাগাও
- হেইও
-
-

হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট হয়। ঠ্যালায় মগ্ন যাত্রীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। কয়েকজন আনন্দে জাপটে ধরে সেই বিরক্তিকর লোকটিকে। এখন সে আর বিরক্তিকর নয়। নেতৃত্বসূলভ ভুমিকার জন্য অজান্তেই সে এখন সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে। চোখেমুখে বিজয়ের হাসি সবার। গাড়ি স্টার্ট হয়ে যাওয়ায় একে একে যাত্রীরা উঠে পড়ে গাড়িতে। গুটিয়ে রাখা প্যান্ট ঠিকঠাক করতে থাকে কেউ কেউ। তাদের চোখে মুখে স্বস্তির ছাপ। গন্তব্যে পৌছাবেই গাড়ি, আশার সঞ্চার হয়। কারণ সামনে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে একজন যোগ্য নেতা। বিপদসংকুল পথের পথ প্রদর্শক। সকল যাত্রী গাড়িতে উঠে পড়লেও সে এখনও উঠেনি। আবার এগিয়ে চলছে গাড়ির সমনে সামনে পথ দেখিয়ে। সঠিক পথে গাড়িটি না উঠিয়ে সে থামবেন না। সে আমাদের অগ্রগামী হিরো।